দিনে ৮ গ্লাস পানি খাওয়াই কি যথেষ্ট ? || Is drinking 8 glasses of water a day enough?
এক হিসেবে মানুষের শরীরও কিন্তু পৃথিবীর মতো। পৃথিবীর যেমন অধিকাংশই পানি, শরীরও তাই। এর ৬০ ভাগের বেশি পানি। মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের তিন ভাগের ২ ভাগ, ফুসফুসের ৮৩ ভাগ, ত্বকের ৬৪ ভাগ, এমনকি হাড়েরও ৩১ ভাগ পানি। আর তাই খাবার ছাড়া কয়েক সপ্তাহ বাঁচা গেলেও পানি ছাড়া টেকা যায় না কয়েক দিন। কিন্তু শরীর ঠিক রাখতে দিনে কতখানি পানি খাওয়া উচিত? চলুন বিস্তারিত জেনে নিই..............
কেবল যে শরীরের অনেকখানি পানি, তা–ই না। শরীর অনেক কাজের জন্যও পানির ওপর নির্ভর করে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি উপাদান পরিবহন, বর্জ্য অপসারণ, বিভিন্ন অংশ ও হাড়ের জোড়া ও টিস্যু লুব্রিকেট রাখা—সব কাজেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পানি। পাশাপাশি বজায় রাখে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ও তরলের ভারসাম্য।
অন্যদিকে নানাভাবে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম ও প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয় পানি। খরচ হয় খাবার বিপাক করতে ও শক্তিতে পরিণত করতে। এভাবে যে পরিমাণ পানি প্রতিদিন শরীর খরচ করে, তা যদি দিনে দিনে পূরণ করা না যায়, তখনই ঘটে বিপত্তি। কারণ, শরীরের অনেকগুলো প্রক্রিয়া এই পানির ওপর নির্ভর করে।
সে জন্য প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই পরিমাণটা কত? সাধারণত বলা হয়ে থাকে, প্রতিদিন ২৫০ মিলি.লিটার মাপের ৮ গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। মানে দিনে মোট পান করা উচিত ২ লিটারের মতো পানি।
কিন্তু সেটা পুরোনো কথা। এখন অমন ধরাবাঁধা নিয়ম আর বলা হয় না। কারণ, আপনার শরীরের কতখানি পানির প্রয়োজন, তা অনেকটাই নির্ভর করে আপনার বয়স, লিঙ্গ ও আপনার দৈনিক কাজের পরিধির ওপর।
যেমন ধরুন, আপনি যদি উষ্ণ অঞ্চলে থাকেন, আপনাকে বেশি পানি পান করতে হবে। একই কথা প্রযোজ্য যাঁরা বেশি কাজ করেন তাঁদের জন্য। আবার মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের পানির প্রয়োজন হয় বেশি। কিন্তু গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের আবার বেশি পানির দরকার থাকে।
সাধারণত ছেলেদের দৈনিক পানির চাহিদা থাকে সাড়ে ৩ লিটারের মতো। আর মেয়েদের আড়াই লিটার। কিন্তু এত পানি পান করার আসলে প্রয়োজন পড়ে না। কারণ, আপনি খাবারের মাধ্যমেও অনেকখানি পানি গ্রহণ করেন। আবার কিছু খাবারে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সেগুলো আপনার দৈনিক পানি গ্রহণের পরিমাণ ঠিক রাখতে বেশ সাহায্য করে। যেমন শসা, তরমুজ, কমলা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
শুনতে অদ্ভত শোনালেও কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি পানে সমস্যাও হয়। একে বলে হাইপোনাট্রেমিয়া। তখন অতিরিক্ত পানির চাপে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। রক্ত ঠিকমতো পরিষ্কার করতে না পারায় তাতে সোডিয়াম অনেক বেশি মিশে যায়। ফলে কোষগুলো ফেঁপে যেতে থাকে। তখন কিডনি ও হৃৎপিণ্ডের জটিলতার আশঙ্কা তৈরি হয়। বিশেষ করে খেলা বা অনুশীলনের পর ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ না করলে খেলোয়াড়দের এমনটা হতে পারে।
তবে সাধারণত হয় উল্টোটা। শরীরে পানির ঘাটতি দেখা যায়। সেটা বোঝা যায় শরীরের নানা উপসর্গ দেখে। সবচেয়ে সহজ নির্দেশক প্রস্রাব কেমন হচ্ছে, তা দেখা। সাদা বা হালকা হলুদ রং হলে আপনার পানি পানের পরিমাণ ঠিক আছে। কিন্তু রং গাঢ় হলে বুঝবেন, পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়াও কম পানি পানের জন্য মাথাব্যথা, মাইগ্রেনের ব্যথা, ঘুমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ঘোরা ইত্যাদি হয়।
তাহলে দিনে আপনি কতখানি পানি পান করবেন?
সেটা আপনার শারীরিক নানা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে মোটাদাগে একটা হিসাব করতে পারেন। পাউন্ডে আপনার ওজন করুন। আপনার দৈনিক পানির চাহিদা হবে তার অর্ধেক আউন্স। এবার সে পরিমাণটাকে লিটারে করে সে অনুযায়ী পানি পান করা শুরু করুন। তবে একবারে পানির পরিমাণ বেশি বাড়াবেন না। একটু একটু করে বাড়িয়ে সময় নিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে আসুন। নইলে, হঠাৎ বেড়ে গেলে আপনার শরীর তার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য,
সাধারন স্বাস্থ্য-সমস্যা ও সমাধান, দৈনন্দিন স্বাস্থ্য-ঝুঁকি সম্পর্কে আপনার
সাধারন জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে চোখ রাখতে পারেন-ঃ
Official Page (Health Sense Bangla)
আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন এবং সুস্থ থাকুন।
Thanks. Keep it up...
ReplyDelete