Why dengue is deadly... || ডেঙ্গু যে কারণে প্রাণঘাতী...
ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ ভাগ হয় উপসর্গবিহীন অথবা সাধারণ জ্বরের মতো সামান্য উপসর্গ। বাকি পাঁচ ভাগ মানুষের রোগ হয় জটিল এবং এদের মধ্যে কারও কারও রোগ প্রাণঘাতী হয়। ইনকিউবিশন পিরিয়ড (উপসর্গগুলোর সূত্রপাত থেকে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ের মধ্যবর্তী সময়) স্থায়ী হয় তিন-চৌদ্দ দিন, কিন্তু বেশিরভাগই তা হয় চার-সাত দিন। পর্যটকদের ডেঙ্গু হয় না, যদি ঘরে ফেরার ১৪ দিন পরে জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ শুরু হয়। বাচ্চাদের প্রায়ই এ উপসর্গগুলো হয়; যা সাধারণ সর্দি এবং গ্যাস্ট্রোএন্টারাটাইটিসের (বমি ও ডায়রিয়া) মতো। বড়দের চেয়ে ছোটদের উপসর্গের তীব্রতা কম হয়, কিন্তু রোগের জটিলতার শিকার তাদের বেশি হয়।
উপসর্গঃ-
ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী মশা কামড়ানোর দুই থেকে সাত দিন পর উপসর্গ স্পষ্ট হয়। কিছু সাধারণ উপসর্গ হলো-
- জ্বরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ বেড়ে যায়।
- জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে।
- বিরামহীন মাথাব্যথা, হাড়, হাড়ের জোড়া ও পেশিতে তীব্র ব্যথা, বমি ভাব/বমি হওয়া,
- গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, সারা শরীরের ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া,
- চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ উপসর্গ।
ডেঙ্গু যদি প্রথমবার আক্রান্ত করে এবং এটি যদি তরুণ বয়সে বা শিশুদের হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ থাকে না। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে জ্বর নাও হতে পারে। টিপিক্যাল ডেঙ্গু/ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুতে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকতে পারে।
সংক্রমণের কোর্স তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত-প্রাথমিক, প্রবল এবং আরোগ্য।
প্রাথমিক পর্যায়ে-
- অত্যধিক জ্বর, প্রায়শ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)-র বেশি,
- সঙ্গে থাকে সাধারণ ব্যথা ও মাথাব্যথা।
- এটি সাধারণত দুই থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়। এ পর্যায়ে ৫০-৮০ শতাংশ উপসর্গে র্যাশ বের হয়।
- এটা উপসর্গের প্রথম বা দ্বিতীয় দিনে লাল ফুসকুড়ি হিসাবে দেখা দেয়, অথবা পরে অসুখের মধ্যে (দিন ৪-৭) হামের মতো র্যাশ দেখা দেয়।
- কিছু প্যাটেচিয়া (ছোট লাল বিন্দু যেগুলো ত্বকে চাপ দিলে অদৃশ্য হয়, যেগুলোর আবির্ভাব হয় ত্বকে চাপ দিলে এবং এর কারণ হচ্ছে ভগ্ন রক্তবাহী নালি) এ জায়গায় আবির্ভূত হতে পারে
- কারও মুখ ও নাকের মিউকাস মেমব্রেন থেকে অল্প রক্তপাতও হতে পারে।
ডেঙ্গু কখন মারাত্মকঃ-
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অসুখটি চরম (প্রবল) পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
- প্রবল জ্বর হয় এবং সাধারণত এক থেকে দুই দিন স্থায়ী হয়।
- এ পর্যায়ে প্রচুর পরিমাণে তরল বুক এবং অ্যাবডোমিনাল ক্যাভিটিতে বর্ধিত ক্যাপিলারি শোষণ ও লিকেজের কারণে জমে। এর ফলে রক্তপ্রবাহে তরলের পরিমাণ কমে যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ হ্রাস পায়।
- অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকলতা এবং প্রবল রক্তপাত হয়, সাধারণত গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ট্র্যাক্টে সমস্যা বেশি হতে পারে।
- ডেঙ্গুর সব ঘটনার পাঁচ শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে শক (ডেঙ্গু শক সিনড্রোম) এবং হেমারেজ (ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার) ঘটে।
- তবে যাদের আগেই ডেঙ্গু ভাইরাসের অন্যান্য স্টিরিওটাইপের সংক্রমণ ঘটেছে (সেকেন্ডারি ইনফেকশন) তারা বেশি বিপদের মধ্যে রয়েছেন।
- শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে, যেমন ফুসফুস ও পর্দার মাঝে (প্লুরাল ইফিউশন) কিংবা পেটে সামান্য পরিমাণ পানি জমতে পারে।
- বেশি প্লাজমা লিকেজ হলে রক্তচাপ কমে যায় ও রোগী শকে চলে যায়।
- বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে ও মাল্টি অর্গান ফেউলিউর হতে পারে।
- ফুসফুস, কিডনি, হার্ট ইত্যাদি এর ব্যতিক্রম নয়। হার্ট বা কিডনি ফেইলিউর হলে বুকে পানি জমা, শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতায় রোগী পড়তে পারে।
- ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে তাই শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, শ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। ফুসফুসের অভ্যন্তরে বায়ুকুঠুরির মাঝের পর্দা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে তীব্র শ্বাসকষ্ট হয় এবং কাশির সঙ্গে রক্ত এসে একইসঙ্গে দুই ফুসফুসের পর্দায় পানি আসার কারণে শ্বাসকষ্ট হয়।
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য,
সাধারন স্বাস্থ্য-সমস্যা ও সমাধান, দৈনন্দিন স্বাস্থ্য-ঝুঁকি সম্পর্কে আপনার
সাধারন জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে চোখ রাখতে পারেন-ঃ
আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন এবং সুস্থ থাকুন।
No comments