দীর্ঘস্থায়ী কাশি? এই নিবন্ধটি আপনার জন্য.....(Chronic cough? This article is for you)

কাশি যদি প্রাপ্তবয়স্কদের আট সপ্তাহ বা তার বেশি সময় এবং শিশুদের চার সপ্তাহ স্থায়ী হয় তাহলে সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী কাশি বলে।

দীর্ঘস্থায়ী কাশি কেবল বিরক্তিকর সমস্যা-ই নয়, এটি ঘুম ব্যাহত করতে পারে এবং ক্লান্ত বোধ সৃষ্টি করে। 

দীর্ঘস্থায়ী কাশি হলে গুরুতর ক্ষেত্রে বমি, হালকা মাথাব্যথা এবং এমনকি পাঁজরের ফাটল হতে পারে। যদিও কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ হওয়া সমস্যাটিকে চিহ্নিত করা কঠিন হতে পারে, তবে সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলো হলো-তামাক ব্যবহার, পোস্টনাসাল ড্রিপ, হাঁপানি এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স। অন্তর্নিহিত সমস্যাটির চিকিৎসা করা হলে দীর্ঘস্থায়ী কাশির উপশম হয়।

লক্ষণ :

সর্দি ও নাক বন্ধ থাকা, গলার পেছনে তরল বয়ে যাওয়ার অনুভূতি (পোস্টনাসাল ড্রিপ), ঘন ঘন গলা পরিষ্কার এবং গলা ব্যথা, কর্কশতা, শ্বাসকষ্ট, মুখে টক স্বাদ, কোনো ক্ষেত্রে কাশি থেকে রক্ত পড়া।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন :

যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে কাশি থাকে, বিশেষ করে থুথু বা রক্ত বের হয়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং কাজকে প্রভাবিত করে তাহলে চিকিৎকরে শরনাপন্ন হওয়ার জরুরী।

কারণ :

মাঝে মাঝে কাশি হওয়া স্বাভাবিক। এটি ফুসফুস থেকে বিরক্তিকর নিঃসরণ বা শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। দীর্ঘস্থায়ী কাশির জন্য নিম্ন-লিখিত  কারণগুলো দায়ী।

১. পোস্ট অনুনাসিক ড্রিপ :

যখন নাক বা সাইনাস অতিরিক্ত শ্লেষ্মা উৎপন্ন করে, তখন তা গলার পেছনের দিকে নেমে যেতে পারে এবং কাশির উদ্রেক হয়। হাঁপানি : কাশি ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে হতে পারে এবং এর অন্যতম কারণ হাঁপানি। উপরের শ্বাসনালির সংক্রমণ, ঠান্ডা বাতাস বা কিছু রাসায়নিক বা সুগন্ধির সংস্পর্শে আসলেও কাশি বাড়তে পারে।

২. গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ :

এ অবস্থায় পাকস্থলীর অ্যাসিড পেট এবং গলা (অন্ননালি) সংযোগকারী নলটিতে উঠে আসে। ক্রমাগত পেট, বুক জ্বালা থেকে দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে।

৩. জীবাণুর সংক্রমণ :

নিউমোনিয়া, ফ্লু, সর্দি বা উপরের শ্বাসনালির অন্যান্য সংক্রমণ ভালো হয়ে যাওয়ার পরও কাশি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কাশির একটি সাধারণ কারণ হলো পারটুসিস, যা হুপিং কাশি নামেও পরিচিত। দীর্ঘস্থায়ী কাশি ফুসফুসের ছত্রাক সংক্রমণ, যক্ষ্মা (টিবি) সংক্রমণ বা ননটিউবারকুলাস মাইকোব্যাকটেরিয়াল জীবাণুর সংক্রমণে হতে পারে।

৪. ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ :

এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনক ফুসফুসের রোগ যা ফুসফুস থেকে বায়ুপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, এর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস এবং এমফিসেমা। দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিসে কাশি ও থুথুর রং রঙিন হয়। এমফাইসিমাতে শ্বাসকষ্ট হয় এবং ফুসফুসের (অ্যালভিওলি) বায়ু থলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ধূমপায়ীদের এ রোগ বেশি হয়।

৫. রক্তচাপের ওষুধ :

অ্যাঞ্জিওটেনসিন-কনভার্টিং এনজাইম ইনহিবিটর, যা সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদযন্ত্রের অসুস্থতায় ব্যবহৃত হয়, এটি দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ হিসাবে পরিচিত।

জটিলতা :

ঘুমের ব্যাঘাত, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি, অত্যধিক ঘেমে যাওয়া, মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ হারানো, সিনকোপ।

রোগ নির্ণয় :

ইমেজিং পরীক্ষা যেমন-এক্সরে ও সিটি স্ক্যান। ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষা স্পিরোমেট্রি । এ পরীক্ষায় ফুসফুস কতটা বাতাস ধরে রাখতে পারে এবং কত দ্রুত শ্বাস ছাড়তে পারে সেটা চেক করে দেখা হয়। ল্যাব পরীক্ষা অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়ার জন্য নমুনা পরীক্ষা এবং ব্রনকোসকোপি পরীক্ষা।

চিকিৎসা :

দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ নির্ণয় কার্যকর চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে, একাধিক অন্তর্নিহিত অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ হতে পারে। কেউ যদি ধূমপান করেন, সেটা এখনই ছেড়ে দিন। এক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী কাশি থেকে অনেকটা পরিত্রান পাবেন। পরিশেষে উল্লেখ্য যে, দীর্ঘস্থায়ী কাশির জন্য একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে; স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য, সাধারন স্বাস্থ্য-সমস্যা ও পরামর্শ পেতে ফলো করতে পারেন-ঃ

Youtube (HealthSenseBangla)

Facebook (ShahPharmachy)

Twiter (shah_pharmacy)

Instagram (ShahPharmacy)

BlogSpot

No comments

Powered by Blogger.